‘হবিগঞ্জ পৌরসভার কর আদায়ের পরিধি দিন দিন বাড়ছে, আদায়ের পরিমানও বাড়ছে। সময়মতো পৌরকর পরিশোধ করলে পৌরসভার কাজ করার সক্ষমতাও বাড়বে। ফলে সঠিকভাবে নাগরিক সেবা দেয়াও সম্ভব হবে।’ -হবিগঞ্জ পৌরসভার ৩ দিনব্যাপী পৌরকর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোঃ ফরিদুর রহমান। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টায় পৌরভবন প্রাঙ্গণে ৩ দিনব্যাপী করমেলার উদ্বোধনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক বলেন, ‘পৌরসভার করদাতাগণের মতামত ও পরামর্শক্রমেই তাদের করের টাকা পৌরবাসীর উন্নয়নে ব্যয় হবে। নাগরিকগনের চাহিদা অনুযায়ী অগ্রাধিকারভিত্তিতে করের টাকা যথাযথভাবে ব্যয় হচ্ছে কিনা পৌরবাসী তা দেখতে পাবেন। জনগনের মতামত ও পরামর্শ অনুযায়ী পৌরসভার বাজেট হবে।’
জেলা প্রশাসক বলেন,‘হবিগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক ও কাউন্সিলরগণ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছেন। করদাতাগন পৌরসভার উন্নয়নে তাদের মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরলেই পৌরকরের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত হবে।’ তিনি পৌরসভার সেবামুলক কাজ ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভাপতির বক্তব্যে হবিগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক প্রভাংশু সোম মহান বলেন,‘আমরা পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণের জন্যই প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন,‘শহরের বাইরে হতে পৌর এলাকায় টমটম প্রবেশ করার কারনে যানজট দেখা দেয়।’ যানজট নিরসনে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ টমটম চলাচল নিয়ন্ত্রন করতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার জন্যে তিনি জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রশাসক বলেন,‘শারদীয় দুর্গোৎসবের আগেই ব্যাকরোডের গর্তভারাটসহ রাস্তা মেরামত করা হবে।’ তিনি বলেন,‘পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত ড্রেন পরিস্কার ও আবর্জনা অপসারণের কাজ করছে। কিন্তু ড্রেনে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারনে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ’ তিনি এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
প্রভাংশু সোম মহান বলেন,‘ইতিমধ্যে টাউন মডেল পুকুরটি স্টিলের পিলারের মাধ্যমে সংরক্ষন করা হয়েছে। ওয়াকওয়ে নির্মানের মাধ্যমে পুকুরটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া হবে।’ তিনি বলেন,‘আমরা পৌরসভার কাজকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। এ ব্যাপাওে পৌরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন। আপনারা যথাসময়ে পৌরকর পরিশোধ করুন, আমরা নাগরিক সেবা গতিশীল করবো।’
প্রশাসক বলেন,‘যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশে পদচারনা শুরু করেছি, তাদের দেখানো পথে, তাদের আদর্শকে ধারণ করে দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন পৌরসভার কাউন্সিলর শাহ সালাউদ্দিন আহাম্মদ টিটু, মোঃ সফিকুর রহমান সিতু, সহকারী কমিশানার মোহাম্মদ উল্লাহ, হবিগঞ্জ জেলা সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের পক্ষে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মিঠুন রায়, করদাতাদের পক্ষে বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সৈয়দ মুজিবুর রহমান পলাশ। পৌর কাউন্সিলরদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন টিপু আহমেদ, খালেদা জুয়েল, শেখ সুমা জামান, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ তারিকুল ইসলাম প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাবেদ ইকবাল চৌধুরী।
সভায় হবিগঞ্জ জেলা সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের পক্ষে ৩৪ লক্ষ ৭৮ হাজার ২ শত টাকা পৌরকার পরিশোধ করেন ডাঃ মিঠুন রায়। এ কর পরিশোধের পর তার হাতে পৌরসভার সম্মাননা সনদ তুলে দেন প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক ড. মোঃ ফরিদুর রহমান। অন্যান্য করদাতাদের হাতেও সনদ ও উপহার তুলে দেয়া হয়।
মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার পৌরসভা প্রাঙ্গণে পৌরকরমেলার ষ্টল ও ব্যাংক বুথের মাধ্যমে সকাল ১০ টা হতে ৫ টা পর্যন্ত পৌরকর ও পানির বিল গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন মেলা আয়োজনকারী কর্মকর্তাবৃন্দ।#