‘মেয়র আতাউর রহমান সেলিমের সাহসী উদ্যোগের কারনেই হবিগঞ্জ পৌরসভার কোটি কোটি টাকার সম্পদ উদ্ধার হয়েছে।’-বর্তমান পৌরপরিষদের ৩ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট মোঃ আবু জাহির। তিনি বলেন ‘মেয়র আতাউর রহমান সেলিমের নেতৃত্বে বর্তমান পৌরপরিষদের বড় সফলতা হচ্ছে নতুন ডাম্পিং স্টেশন বাস্তবায়ন। এব্যাপারে মেয়র আমার সহযোগিতা চাওয়ার পর আমি রিচি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ সকলের সাথে আলাপ আলোচনা করে ডাম্পিং স্টেশনের জমি নির্ধারণ করি। তারপর প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয় করে ডাম্পিং স্টেশনে যাওয়ার রাস্তা নির্মান করেছি। এখন রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে বর্জ্য হবে সম্পদ। আগামীতে আমরা হবিগঞ্জ পৌরসভার মাধ্যমে এমনই উদ্যোগ নেবো।’
বর্তমান পৌরপরিষদের ৩ বছর পূর্তিতে হবিগঞ্জ শহরের জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সুধী সমাবেশের আয়োজন করে হবিগঞ্জ পৌরসভা। ওই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন এডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপি। তিনি উপস্থিত সুধীবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন। অতিথিবৃন্দ পৌরসভার উন্নয়নে তাদের মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন। আলোচানায় যে বিষয়গুলো উঠে আসে সেগুলো হলো জলাবদ্ধাতা ও যানজট নিরসন, খোয়াই নদী দখল ও দুষনমুক্ত করা, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত জনসচেতনতা সৃষ্টি, টমটমের ভাড়া নিয়ন্ত্রন, বিল্ডিং নির্মানের সময় পৌরসভা অনুমোদিত প্ল্যান অনুসরন করা ইত্যাদি।
এডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপি বলেন, ‘পৌরসভার নালা, খাল, পুকুর যারা অবৈধভাবে দখল করে আছেন তাদের স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। হবিগঞ্জ পৌরসভার পৌরপরিষদ সিদ্ধান্ত গ্রহন করবে। তারপর প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করবো।’ তিনি আরো বলেন,‘পুরাতন খোয়াই নদীকে যদি আমরা লেক হিসেবে রক্ষনাবেক্ষন করতে পারি এবং দুই পাড়ে রাস্তা থাকে তাহলে হবিগঞ্জের সৌন্দর্য্য অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। এ ব্যাপারে পৌরসভা উদ্যোগ গ্রহন করবে। আমরা সহযোগিতা করবো।’ এমপি বলেন,‘এই শহর আপনার, আমার, এই শহরের পরিচ্ছন্নতা রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। এই পবিত্র রমজান মাসে মসজিদে খুতবার সময় ইমাম ও খতিব সাহেবরা যাতে পরিচ্ছন্নতা রক্ষার জন্য সচেতনতামুলক কথা বলেন যে জন্য পৌরসভা আহবান জানাবে।’
প্রধান অতিথি আরো বলেন,‘পৌরসভার অনুমোদন নিয়ে প্ল্যান অনুযায়ী শহরবাসী যাতে বিল্ডিং নির্মাণ করেন সেই জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। আমরা একটি পরিকল্পিত শহর গড়ে তোলতে চাই। পরিকল্পিত শহর গড়ে উঠলেই শহরে আর জলাবদ্ধতা থাকবে না।’
সভাপতির বক্তব্যে মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন,‘মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের ৮ মাসের মাথায় আমার একমাত্র পূত্রকে হারিয়ে আমি মহান আল্লাহর কাছে চেয়েছিলাম যাতে আল্লাহ আমাকে সেই মানসিক শক্তি দেন যাতে আমি পৌরবাসীর উন্নয়নে কাজ করতে পারি।’ মেয়র বলেন,‘সকলের সহযোগিতায় আমি পৌরপরিষদকে সাথে নিয়ে পৌরসভার জমি উদ্ধার, বাজার ইজারা নিয়ন্ত্রনসহ পৌরসভা আয়বর্ধনে কাজ করেছি। আবর্জনার স্তুপ সরিয়ে নতুন ডাম্পিং স্টেশন বাস্তবায়ন করেছি।’ তিনি বলেন,‘এ সকল কাজ করতে অনেক বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমি হবিগঞ্জের সাংবাদিক ও সকল শ্রেনী পেশার মানুষের সহযোগিতা চেয়েছি। আমি প্রত্যাশা করি বাকী সময়টুকুও আমি সকলের সহযোগিতায় পৌরসভাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রফেসার ইকরামুল ওয়াদুদ, এডভোকেট পূন্যব্রত চৌধুরী বিভু, প্রফেসার ইলিয়াছ বখত চৌধুরী জালাল, জগদীশ চন্দ্র মোদক, এডভোকেট নলীনি কান্ত রায় নিরু, ডাঃ অসিত রঞ্জন দাশ, সাংবাদিক এডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, মোহাম্মদ শাবান মিয়া, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রী’র সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান শামীম, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান শামীম ও মটর মালিক গ্রুপের সভাপতি মোঃ ফজলুর রহমান চৌধুরী। এছাড়াও মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসিব খান চৌধুরী পাবেল। পৌর কাউন্সিলরদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন মোঃ জাহির উদ্দিন, মোহাম্মদ জুনায়েদ মিয়া, গৌতম কুমার রায়, টিপু আহমেদ, শাহ সালাউদ্দিন আহাম্মদ টিটু, আলাউদ্দিন কুদ্দুছ, শফিকুর রহমান সিতু, প্রিয়াংকা সরকার ও শেখ সুমা জামান। এছাড়াও হবিগঞ্জের সাবেক জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, আইনজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেনীপেশার প্রতিনিধিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি বর্তমান পৌরপরিষদের ৩ বছর পূর্তিতে ‘অগ্রগতির ৩ বছর’ নামের একটি ক্রোড়পত্রের উদ্বোধন করেন। এছাড়াও পৌরসভার ৩ বছরের কর্মকান্ডের উপর নির্মিত একটি প্রতিবেদন প্রজেক্টরে উপস্থাপন করা হয়।#